কক্সবাজারের হোটেলে আটকা পড়েছেন ২৫ হাজার পর্যটক



গত কয়েক দিন ধরে চলা অস্বাভাবিক ভারী বৃষ্টির ফলে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে কলাতলীর হোটেল-মোটেল জোনের পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। এই কারণে পর্যটকদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। জলাবদ্ধতার কারণে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত কমপক্ষে ২৫ হাজার পর্যটক হোটেল রুমে আটকা পড়েছেন।

 বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে হালকা বৃষ্টি শুরু হলেও দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট থেকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়, যা ১২ ঘণ্টা ধরে চলতে থাকে এবং রাত ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে আবারও ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়, এবং এর সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া চলে। বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত শহরের প্রধান সড়ক, কলাতলী সৈকত সড়কসহ কমপক্ষে ৩৫টি আঞ্চলিক সড়ক জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে, ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।


বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ৪৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা এই মৌসুমে সর্বাধিক। কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুল হান্নান জানান, এই মৌসুমে একদিনের বৃষ্টিপাতের ক্ষেত্রে এটি সর্বোচ্চ পরিমাণ।

আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান আরও বলেন, বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা এবং পায়রা বন্দরের জন্য স্থানীয় সতর্কতা সংকেত নং ৩ জারি করা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে থাকা সকল মাছ ধরার নৌকা এবং ট্রলারকে সাবধানে চলাচলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থাকার জন্য বলা হয়েছে।


সমুদ্র সৈকতে লাল পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে এবং পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে।

কক্সবাজার হোটেল-গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম শিকদার জানান, গত ৫০ বছরে শহরে এমন বন্যা দেখা যায়নি। তিনি জানান, অপরিকল্পিত সড়ক উন্নয়ন, নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাব এবং বন উজাড় এই বন্যার জন্য দায়ী।


ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে শুক্রবার ভোরে কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ধস ঘটে, যাতে কমপক্ষে ছয় জন নিহত হয়েছেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url